আজ শনিবার, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৫ নৌকায় ৪শ’ মাঝি !

নিরাক হাসান প্রেম
করোনা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলাকে লকডাউন করা হলেও তা অমান্য করে নৌকা চালাচ্ছে মাঝীরা। বন্দর টার্মিনাল ঘাট বন্ধ থাকলেও আলাদা ঘাট তৈরী করে নৌকা পারাপার করছে তারা। আজ মঙ্গলবার টার্মিনাল ঘাটের পাশে বটতলায় সরেজমিনে দেখা গেছে এ দৃশ্য। জনসমাগম ঘটিয়ে এক নৌকায় ১০ থেকে ১২ জন মানুষকেও পারাপার হতে দেখা গেছে।

কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নারায়ণগঞ্জ জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে অনেক আগেই। যার ফলে চলছে না কোনো গাড়ী, লঞ্চ কিংবা স্টিমার। বন্ধ হয়ে গেছে সব দোকান-পাট ও বাসস্টান্ড। লকডাউনকে কেন্দ্র করে ঘাটগুলো বন্ধ রাখার পরেও নৌকা চালাচ্ছে অনেক মাঝিরা।

জানা গেছে, ওই ঘাটে ৫টি নৌকা চালায় প্রায় ৪শ’ জন মাঝি। ২ জন করে মাঝি এক নৌকা পারাপার করে। একবারে সিরিয়াল পরলে দ্বিতীয়বার সিরিয়াল আসতে দিনপার হয়ে যায়। কিন্তু এই পারাপারের ফলে অধিক মানুষের সমাগম তৈরী হচ্ছে। একটি নৌকায় ১০ থেকে ১২ জনের মতো যাত্রি নিয়ে নৌকা পারাপার হচ্ছে। ৫ টাকার ভাড়া ১০ টাকা নেয়া হচ্ছে।
আব্দুস সালাম নামে এক যাত্রীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রতিদিন এই পারে আসি না। সপ্তাহে অন্তত ২ দিন আসতে হয় বাজার করার জন্য। ‘বাজার তো নদীর ওই পারেও পাওয়া যায় এই পাড়ে কেন এসেছেন? এমন প্রশ্নের কোন জবাব মেলেনি আব্দুস সালামের কাছ থেকে।

ঘাটের সামনে থাকা ভাসমান হকার গণেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে নৌকা চলাচল করে। পুলিশ বা প্রশাসনের লোকেরা আসলে তারা পালিয়ে যায়। আবার কিছুসময় পর আগের মতো হয়ে যায়। কোনো কোনো সময় পুলিশ এসে অল্প যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে বলে। কিন্তু মাঝিরা কেউ তা মানে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নৌকার মাঝি জানান, এখানে নৌকা কম মাঝি বেশী। ৫টি নৌকার মধ্যে ৪শ’ মাঝি কাজ করে। সিরিয়াল অনুযায়ী ১ ট্রিপ পর পর মাঝি পরিবর্তন হয়। তাই বাধ্য হয়ে ১০ টাকা ভাড়ায় নৌকা চালাচ্ছি। অল্প কিছু টাকা আসে তা দিয়ে কোনো রকম সংসার চালাচ্ছি। সরকার থেকে অনুদান দিছে শুনছি কিন্তু আমরা এখনো পাইনি। তাই ছেলে মেয়েদের জন্য বিপদ হলেও রিস্ক নিয়াই কাজ করতেছি।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল হাকিম সংবাদচর্চাকে জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আনা নেয়ার কাজে কিছু মানুষ পারাপার হয়ে থাকে। তবে সেখানে সদর মডেল থানার একটি টিম এবং আমাদের নৌ থানার একটি টিম কাজ করে। মানুষকে বারংবার বলা হয়েছে সচেতনতা অবলম্বন করে চলাচল করার জন্য। আমরা যথেষ্ট তৎপর এবং সক্রিয়। যতটুকু সম্ভব আমরা চেষ্টা করছি সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য।

এমএইচআর/এসএমআর

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ